কি করলে স্বামী স্ত্রীররে কল্যাণ হয়
স্বামী-স্ত্রীর জন্য কল্যাণ ও বরকতের দু'আঃ যারা ওয়ালীমায় অংশ গ্রহণ করবে অথবা বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্হিত হবে কিংবা বিবাহের সংবাদ শুনবে, তারা বর ও কনের জন্য দু'আ করবে।
জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, আমার আব্বা ৭জন বা ৯ জন কন্যা রেখে মৃত্যুবরণ করলেন। আমি একজন বিধবা মহিলাকে বিবাহ করলাম। আমাকে রাসূল (সাঃ) বললেন,'হে জাবির! তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী না বিধবা? আমি বললাম, "বিধবা"। তিনি বললেন, যদি তুমি কুমারী বিবাহ করতে তাহ'লে তুমি তাকে নিয়ে খেলতে আর সেও তোমাকে নিয়ে খেলত। তুমি তাকে হাসাতে, সেও তোমাকে হাসাত (তবে কতই না ভাল হ'ত)। আমি তাকে বললাম, নিশ্চয় আব্দুল্লাহ্ মারা গেছেন এবং নয় বা সাত জন মেয়ে রেখে গেছেন। আমি অপছন্দ করলাম তাদের মত কাউকে ঘরে আনতে। সেজন্য এমন একজন মেয়েকে বিবাহ করলাম যে তাদের দেখাশুনা করতে পারে। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন অথবা তিনি আমার জন্য কল্যাণের দু'আ করলেন' (বুখারী, হা/৫৩৬৩; মুসলিম, হা/৩৭১১,(৭১৫)-৫৬; মিশকাত, হা/৩০৮৮,৩২১০;)।
বুরাইদাহ্ (রাঃ) বলেন, আনছারদের একটি দল আলী (রাঃ) কে বলল, তোমার সাথে ফাতিমা (রাঃ) বিবাহ দেওয়া হবে। তখন আলী (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এঁর নিকটে আসলেন এবং সালাম দিলেন। রাসূল (সাঃ) বললেন, আলী ইবনু আবী তালিব কি কাজে এখানে আসলে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমি আল্লাহর রাসূলের মেয়ে ফাতিমাকে স্মরণ করছি। রাসূল (সাঃ) বললেন, মারহাবা স্বাগতম! এরচেয়ে বেশি কিছু বললেন না। এরপর আলী (রাঃ) ঐ অপেক্ষামান আনছারদের নিকটে গেলেন, তারা বললেন তোমার খবর কি? তিনি বললেন, আমি শুধুমাএ এই কথায় শুনলাম যে, তিনি বললেন, "মারহাবা স্বাগতম"। তারা বললেন, দু'টির একটিই রাসূলের (সাঃ) পক্ষ থেকে তোমার জন্য রাযী হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট। অথচ তোমাকে মারহাবা ও স্বাগতম উভয় দিয়েছেন। শেষে যখন রাসূল (সাঃ) বিবাহ দিলেন, তখন তিনি বললেন, হে আলী বাসর করতে হ'লে ওয়ালীমার প্রয়োজন। সা'দ (রাঃ) বললেন, আমার কাছে মেষ আছে। আর আনছারদের এক দল তার জন্য ভুট্টা সংগ্রহ করলেন। বাসররাতের দিন রাসূল (সাঃ) বললেন, আমার সাথে সাক্ষাত না করে কিছু কর না। রাসূল (সাঃ) পানি আনিয়ে নিয়ে ওযু করলেন। এরপর বাকী পানি আলী (রাঃ) এর গায়ে ছিটিয়ে দিয়ে বললেন, 'হে আল্লাহ্! তাদের উভয়ের মাঝে বরকত দাও এবং তাদের জন্য বাসরে বরকত দাও' (নাসায়ী কুবরা, হা/১০০৮৮; মুসনাদুল বাঝ্ঝার, হা/৪৪৭১; আদাবুঝ ঝিফাফ, ১০১ পৃষ্ঠা/১ম খন্ড)।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বিবাহ করলেন। তারপর আমার মা আমার কাছে আসলেন এবং আমাকে ঘরে ঢুকালেন, তখন ঘরে আনছারীদের কিছু মহিলা ছিল। তারা বলল, 'তোমার বিবাহ কল্যাণ ও বরকতময় এবং মঙ্গলময় ভাগ্য হোক' (বুখারী, হা/৫১৫৬; মুসলিম, হা/৩৫৪৪ (১৪২২)-৬৯; আবুদাঊদ, হা/৪৯৩৩; ইবুন মাজাহ, হা/১৮৭৬)।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, "কোন লোক বিবাহ করলে নবী (সাঃ) তাকে স্বাগতম জানিয়ে তার জন্য দু'আ করে বলতেন, 'আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন, আল্লাহ তোমার প্রতি বরকত দান করুন। তোমাদের মাঝে উওম সম্পর্ক গড়ে উঠুক' (তিরমিযী, হা/১০৯১; আবু দাউদ, হা/২১৩০, (২১৩২); ইবুন মাজাহ, হা/১৯০৫; আহমাদ, হা/৮৯৪৩; মিশকাত, হা/২৪৪৫; 'বিবাহ' অধ্যায়)।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন