আল কোরআনের ১১৪ সূরার ১০০০ আয়াত, তাফসিরে ইবনে কাছির, সিহাহ সিত্তাহ ও বিবিধ হাদিসে হানাফী মাযহাবের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ
আল কোরআনের ১১৪ সূরার ১০০০ আয়াত, তাফসিরে ইবনে কাছির, সিহাহ সিত্তাহ ও বিবিধ হাদিসে হানাফী মাযহাবের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ
সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ১৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৬। এর (কোরআন) মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা যারা সন্তুষ্ট চিত্তে তাঁর আনুগত্য করে তাদেরকে শান্তির পথে হেদায়াত প্রদান করেন। এরপর তিনি তাঁর (নিজের) অনুমতিক্রমে তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনেন। আর তিনি তাদেরকে সিরাতাম মুসতাকিমে হেদায়াত প্রদান করেন।
সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ১৬ নং আয়াতের তাফসির - তাফসিরে ইবনে কাছির
১৬।কোরআন বিভ্রান্তি দূরকারী ও হেদায়াত প্রদানকারী কিতাব।
সহিহ মুসলিম, ৪২৭ নং হাদিসের (পবিত্রতা অধ্যায়) অনুবাদ-
৪২৭। হযরত আবু মালেক আর-আশ’আরী (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক। ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ওজন দন্ডের পরিমাপকে পরিপূর্ণ করে এবং ‘সুবহানাল্লাহ ওযাল হামদুলিল্লাহ’ আসমান জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে পূর্ণ করে দেবে। ‘সালাত বা নামাজ’ হলো একটি উজ্জল জ্যোতি। ‘সদকা’ হচ্ছে নিদর্শন। ‘সবর’ হচ্ছে জ্যোতির্ময়। আর ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিল স্বরূপ। মূলত সকল মানুষ প্রত্যেক সকালে নিজেকে আমলের বিনিময়ে বিক্রি করে।তার আমল দ্বারা সে নিজেকে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্ত করে অথবা তার ধ্বংস সাধন করে।
* ‘আল – কোরআন’ হচ্ছে কারো পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলিল স্বরূপ।আল কোরআনের দলিল দিয়ে হানাফী ছাড়া অন্য কোন মানব সম্প্রদায়কে সঠিক প্রমাণ করা যায় না।
সূরাঃ ১১০ নাসর, ১ নং থেকে ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে।
২। আর তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখবে।
৩। তখন তুমি তোমার রবের হামদ এর তাসবিহ পাঠ করবে, আর তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই তিনি তো তওবা কবুলকারী।
* আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসার পর মহানবি (সা.) মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে দেখেছেন।হানাফী মাযহাব গঠিত হওয়ার পর থেকে মহানবির (সা.) উম্মতগণ দেখছে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসার পর মানুষ দলে দলে হানাফী মাযহাবে প্রবেশ করছে। সংগত কারণে হানাফী মাযহাব গঠিত হওয়ার পর থেকে হানাফী মাযহাব আল্লাহর দীন সাব্যস্ত হয়।
# কোরআন ও হাদিস হানাফী ইমাম আবু হানিফাকে (র.) সঠিক সাব্যস্ত করে।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। সাহাবা যুগের পর তাদের অনুসারী হতে হবে এ কথা আল্লাহ স্পষ্ট করেই বললেন।
সহিহ মুসলিম, ৬৩৩৯ নং ও ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৩৯।হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। যদি দীন আসমানের দূরবর্তী সুরাইয়া নক্ষত্ররাজির কাছে থাকত, তবে পারস্যের যে কোন ব্যক্তি তা’ নিয়ে আসত; অথবা তিনি বলেছেন, কোন পারসিক সন্তান তা’ অর্জন করত।
সহিহ মুসলিম, ৬৩৪০ নং হাদিসের [ সাহাবায়ে কেরামের (রা.) মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৬৩৪০। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবি করিমের (সা.) নিকট বসা ছিলাম। তখন তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হল। যখন তিনি এ আয়াত পড়লেন, ‘ওয়া আখারিনা মিনহু লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম - আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি’ তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) এরা কারা? নবি করিম (সা.) তার কোন জবাব দিলেন না। এমন কি সে একবার অথবা দু’ বার কিংবা তিনবার তাঁকে জিজ্ঞাস করল। রাবী বলেন, তখন আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রা.) ছিলেন। রাবী বলেন, নবি করিম (সা.) তাঁর হাত সালমানের (রা.) উপর রাখলেন, এরপর বললেন, যদি ঈমান সূরাইয়া তারকার কাছে থাকত তাহলে অবশ্যই তার গোত্রের লোকেরা সেখান পর্যন্ত পৌঁছত।
* হাদিসে বলা তাবেঈ হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) কারণ তিনি ছাড়া হযরত সালমানের (রা.) এলাকার অনারব লোক আর কোন মুজতাহিদ তাবেঈ নেই। সংগত কারণে তাবেঈ হিসেবে তিনি অবশ্যই সঠিক।
# কোরআন ও হাদিস হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আবু ইউসুফকে (র.)সঠিক সাব্যস্ত করে।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
* রাসূলের (সা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবেঈ। সাহাবায়ে কোরামের (রা.) সাথে যারা মিলিত হয়নি তারা তাবে তাবেঈ। সাহাবা যুগের পর তাদের অনুসারী হতে হবে এ কথা আল্লাহ স্পষ্ট করেই বললেন।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩০ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩০। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার থেকে একটি হাদিস শুনে অতঃপর তা’ অন্যদের কাছে পৌঁছে দেয় আল্লাহ তাকে হাস্যোজ্জল ও আনন্দময় করে দেবেন। কেননা এমন কতক ফিকাহ বাহক রয়েছে, যারা প্রকৃতপক্ষে ফকীহ নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী অধিকতর জ্ঞানী হয়ে থাকে।
* মহানবির (সা.) পক্ষ থেকে দু’জন ফকিহ তাঁর হাদিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত।তাঁদের একজন ফিকাহ শিক্ষাদানকারী এবং অন্যজন উক্ত বিষয়ের শিক্ষার্থী, যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারীর চেয়ে উক্ত বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানী। ইতিহাসে এমন শুধু একটি জুটি আছে, তাঁরা হলেন ইমাম আবু হানিফা (র.) ও তাঁর শিক্ষার্থী ইমাম আবু ইউসুফ (র.) যিনি তাঁর ফিকাহ শিক্ষাদানকারী ইমাম আবু হানিফার চেয়ে উক্ত বিষয়ের অধিকতর জ্ঞানী ছিলেন। কারণ ইমাম আবু ইউসুফের (র.) খেলাফতের প্রধান বিচার পতির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু ইমাম আবু হানিফার খেলাফতের প্রধান বিচারপতির যোগ্যতা থাকলেও তাঁর খেলাফতের প্রধান বিচারপতির অভিজ্ঞতা ছিল না। আবার ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞানের সাথে ইমাম আবু হানিফার (র.) জ্ঞান যোগ হয়ে ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান ইমাম আবু হানিফার (র.) সাথে যোগ না হওযায় ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে ইমাম আবু ইউসুফের (র.) জ্ঞান বেশী ছিল। সংগত কারণে তাবে তাবেঈ হিসেবে ইমাম আবু ইউসুফ (র.) অবশ্যই সঠিক।
# কোরআন ও হাদিস হানাফী মাযহাবের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা আব্বাসীয় খলিফাগণকে সঠিক সাব্যস্ত করে।
সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা হযরত ইব্রাহীমের বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব ইমাম হিসাবে সঠিক ছিলেন। হানাফী অমান্যতায় এ তালিকা থেকে তিনজন খলিফা বাদ পড়েছেন। তাদের অমান্যতার কারণ তারা জালিম ছিলেন।
সহিহ আল বোখারী, ৩২৪৭ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩২৪৭।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এ দায়িত্ব (মুসলিম নেতৃত্বের) চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে। যতদিন তাদের দু’জন লোক অবশিষ্ট থাকবে।
* উম্মতের সর্ববৃহৎ দল হানাফী মান্যতায় ৫৩ জন আব্বাসীয় খলিফা কুরাইশ বংশীয় মুসলিমদের বিশ্ব আমির হিসাবে সঠিক ছিলেন।
সহিহ আল বোখারী, ৩৪৪২ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৪৪২। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। যখন অভাব অনটন দেখা দিত তখন ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের উছিলায় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন। তিনি বলতেন হে মাবুদ! আমরা আমাদের নবির (সা.) উছিলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করতাম যে, তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর তখন প্রবল বর্ষণ করতে। এখন আমরা আমাদের নবির চাচা আব্বাসের (রা.) উছিলায় প্রার্থনা করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন ভারী বর্ষণ শুরু হত।
* উছিলায় হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ব্যক্তি এবং তাঁর বংশের খলিফাগণ ছিলেন মহানবির (সা.) ধারাবাহিক ইসলামী নেতা।
সহিহ তিরমিযী, ৩৭০১ নং হাদিসের [ রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আল আব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথে নিয়ে আসবেন। আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও। সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম। তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয়দিক থেকে এমনভাবে মাফ করে দিন, যার পর তাদের আন কোন অপরাধ বাকি না থাকে। হে আল্লাহ তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।
রাযীন এ বাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ - মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।
* আব্বাসীয়গণ মহানবির (সা.) দোয়ায় খলিফা হওয়ায় তারা মুসলিম বিশ্ব আমির হিসেবে সঠিক ছিলেন।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৪১ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
১৪১। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন যেমন প্রিয় বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন ইব্রাহীমকে (আ.)। কিযামতের দিন জান্নাতে আমার ও ইব্রাহীমের আসন সমানা-সামনি হবে। আর আব্বাস (রা.) আমাদের দুই বন্ধুর মাঝখানে একজন মুমিন হিসেবে অবস্থান করবেন।
মেশকাত ৫৮৯৭ নং হাদিসের (সাহাবীদের ফজিলত ও মর্যাদা অধ্যায়) অনুবাদ-
৫৮৯৭। হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)ইরশাদ করেন, আব্বাস (রা.) আমার সঙ্গে জড়িত এবং আমি তার সাথে জড়িত।
* সংগত কারণে আব্বাসীয় খলিফাগণের ৫৩ জন যারা মুসলিম বিশ্বের আমির সাব্যস্ত তাদের সাথে মহানবি (সা.) জড়িত। মহানবি (সা.) যাদের সাথে জড়িত তারা অবশ্যই সঠিক ছিলেন।
# হানাফী মাযহাবে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত সঠিক লোক ৫৫ জন। অহানাফী কোন দলে কোরআন ও হাদিস সাব্যস্ত কোন সঠিক লোক নেই। তথাপি হানাফীরা সঠিক না হয়ে তারা সঠিক হয় কেমন করে?
# মুসলিমদের চিরন্তন সঠিক পাঁচটি দলও হানাফী। তারা হলেন ১। ইমামগণের সর্ববৃহৎ দল ২। আলেমগণের সর্ববৃহৎ দল ৩। মুজাহিদগণের সর্ববৃহৎ দল ৪। হাজীগণের সর্ববৃহৎ দল ও ৫। উমরা আদায়কারীগণের সর্ববৃহৎ দল।
# ইমাম
সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানব জাতির ইমাম বানাব; সে বলেছিল আমার বংশধরগণ হতেও; তিনি বলেছিলেন, আমার প্রতিশ্রুতি জালেমদের প্রতি প্রযোজ্য হবে না।
সূরাঃ ২৫ ফুরকান, ৭৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৭৪। আর যারা প্রার্থনা করে, হে আমাদের প্রতি পালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য ইমাম কর।
সহিহ আবুদাউদ, ৬০১ নং হাদিসের (নামায অধ্যায়) অনুবাদ-
৬০১। হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঘোড়ায় চড়েন। তিনি তার পিঠ থেকে পড়ে যাওয়ায় তাঁর শরীরের ডান দিকে আঘাত পান। এমতাবস্থায় তিনি বসে নামাজে ইমামতি করেন এবং আমরাও তাঁর পেছনে বসে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে মহানবি (সা.) বলেন, ইমামকে এ জন্যই নিযুক্ত করা হয়, যেন তার অনুসরন করা হয়। সুতরাং ইমাম যখন দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তখন তোমরাও দাঁড়াবে। এরপর ইমাম যখন রুকু করবে তখন তোমারও রুকু করবে এবং ইমাম যখন মাথা উঠাবে তখন তোমরাও মাথা উঠাবে। এরপর ইমাম যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে ‘রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ’। ইমাম যখন বসে নামাজ পড়বে তখন তোরাও বসে নামাজ পড়বে।
সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।
* ইমাম তালিকায় মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.) থাকায়, মুমিনগণ মুত্ত্তকীগণের ইমাম হওয়ার প্রার্থনা করায়, মহানবি (সা.) ইমামগণের অনুসারী হতে বলায় এবং তিনি তাদের সৎপথের দোয়া করায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।
# আলেম
সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
* আলেমগণকে আহলে যিকির বলে। কোন কিছু না জানলে তাঁদের কাছ থেকে জানা ফরজ।
সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ২৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৮। এভাবে রং বেরং- এর মানুষ, জন্তু ও আন’আম রয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই তাঁকে ভয় করে।নিশ্চয়্ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল।
* আলেমরা আল্লাহকে ভয় করে বলে তাঁরা আল্লাহর বিষয়ে সত্যকথা বলে।
সহিহ আবু দাউদ, ৩৬০২ নং হাদিসের (জ্ঞান-বিজ্ঞান অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৬০২। কাছীর ইবনে কায়েস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি দামেশকের মসজিদে আবু দারদার (রা.) কাছে বসে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলে, হে আবু দারদা (রা.) আমি রাসূলুল্লাহর (সা.) শহর মদীনা থেকে আপনার কাছে একটা হাদিস শোনার জন্য এসেছি। আমি জানতে পেরেছি আপনি উক্ত হাদিসটি রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে বর্ণনা করেন। এছাড়া আর কোন কারণে আমি এখানে আসিনি। তখন আবু দারদা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য কোন পথ অতিক্রম করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথসমূহের একটি পথ অতিক্রম করান। আর ফেরেশতারা ত্বলেবে এলেম বা জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য তাদের ডানা বিছিয়ে দেন এবং আলেমের জন্য আসমান ও জমিনের সব কিছুই ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি পানিতে বসবাসকারী মাছও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আবেদের উপর আলেমের ফজিলত এরূপ যেমন পূর্ণিমার রাতে চাঁদের ফজিলত সকল তারকা রাজির উপর। আর আলেমগণ হলেন নবিদের ওয়ারিছ এবং নবিগণ দীনার ও দিরহাম মীরাছ হিসেবে রেখে যান না; বরং তাঁরা রেখে যান ইলম।কাজেই যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করল সে প্রচুর সম্পদের মালিক হলো।
* কোন কিছু না জানলে আল্লাহ আলেমগণের নিকট থেকে সেই জিনিস জেনে নেওয়া ফরজ করায়, আলেমগণ আল্লাহকে ভয় করেন বলে এবং আলেমগণ নবিগণের ওয়ারিশ হওয়ায় তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।
# মুজাহিদ
সূরাঃ ২২ হাজ্জ, ৭৮ নং আয়াতের অনুবাদ
৭৮।আর জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে (জিহাদের জন্য) মনোনীত করেছেন।তিনি দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত বা জাতি।তিনি পূর্বে তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করেছেন। আর এতে (এ কোরআনেও তোমাদের ‘মুসলিম’ নাম করণ করা হয়েছে) যেন রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যি হন এবং তোমরা স্বাক্ষী হও মানব জাতির জন্য। অতএব তোমরা সালাত বা নামাজ কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহর সাথে যুক্ত থাক। তিনি তোমাদের অভিভাবক। কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি।
সহিহ আল বোখারী, ২৬৮৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৬৮৮। হযরত আবু সাঈদ (রা.)কর্তৃক বর্ণিত।। নবি করিম (সা.) বলেছেন, এমন এক যামানা আসবে যখন একদল লোক আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে থাকবে। তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে তোমাদের সঙ্গে কি নবি করিমের (সা.) কোন সাহাবা (রা.) আছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। তাদেরকে বিজয় দান করা হবে। এরপর এমন এক সময় আসবে,তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে, নবি করিমের (সা.) সাহাবায়ে কেরামের (রা.) সাহচর্য লাভ করেছেন, এমন লোক কি তোমাদের সঙ্গে আছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। সুতরাং তাদেরকে বিজয় দান করা হবে। এরপর আরো একটি যুগ এমন আসবে, তখনও তাদেরকে জিজ্ঞাস করা হবে, তোমাদের সাথে এমন কোন ব্যক্তি আছেন কি? যিনি নবি করিমের (সা.) সাহাবাদের (রা.) সহচরদের (র.)সাহচর্য লাভ করেছেন? বলা হবে হ্যাঁ আছেন। সুতরাং তাদেরকেও বিজয় দান করা হবে।
* যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে এবং আল্লাহ যাদেরকে বিজয় দান করেন তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।
# হাজী ও উমরা আদায়কারী
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ৯৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৯৬। নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম ঘর, যা মানব জাতির জন্য প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। তাতো মক্কায়। উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের জন্য হেদায়াত।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১২৫ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১২৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর প্রতিনিধি তিন শ্রেণীর, যোদ্ধা, হাজী এবং উমরাহ আদায়কারী।
* কাবার হেদায়াত তারা পায় যারা হেদাযাতের জন্য সেখানে আসে। তাদের হাজী ও উমরাহ আদায়কারী আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে তাঁদের সর্ববৃহৎ দল অবশ্যই সঠিক।
# মুসলিমদের উপরোক্ত পাঁচটি দল যখন যে দলের সাথে ছিল তখন সে দল সঠিক ছিল। এখন তারা যে দলের সাথে আছে তারা এখন সঠিক আছে।
সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-
১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।
* হানাফী ছাড়া অন্যকারো পথকে কেউ মু’মিনদের পথ প্রমাণ করতে পারবে কি? যদি না পারে তবে তারা তো জাহান্নামের পথেই চলছে।
সূরাঃ ৪১ হা-মীম আস-সাজদা, ৩৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৩। কথায় কে উত্তম ঐ ব্যক্তি থেকে যে আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকে, আমলে সালেহ করে এবং বলে, আমিতো মুসলিমদের মধ্যে গণ্য।
* দৈনিক পাঁচবেলা যারা আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকে, আমলে সালেহ করে এবং বলে, তারা মুসলিমদের মধ্যে গণ্য, তাঁরা হলেন আমাদের নিরহংকারী মোয়াজ্জেনগণ। কেয়ামতের মাঠে যাঁদের গলা উঁচু হবে। তাঁদের সর্ববৃহৎ দল হানাফী।
সহিহ তিরমিযী, ১৯৮ নং হাদিসের (নামাজ অধ্যায়) অনুবাদ-
১৯৮। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ইমাম হচ্ছে যামিন এবং মোয়াজ্জিন হলো আমানতদার। হে আল্লাহ! ইমামকে সৎপথ দেখাও এবং মুয়াযযিনকে ক্ষমা কর।
* মোয়াজ্জিনগণ দীনের আমানতদার। তারমানে তাঁদের মাঝে অবশ্যই চিরকাল দীন পাওয়া যাবেই।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* মোয়াজ্জিনগণ দীনের আমানতদার বিধায় তাঁদেরকে উম্মত নয় বলার সুযোগ নেই। তাঁদের মাঝে মতভেদও আছে। সংগত কারণে মহানবির (সা.) আদেশ অনুযায়ী তাঁদের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। তাঁরা হানাফী বিধায় মহানবির (সা.) আদেশ অনুযায়ী হানাফী মোয়াজ্জিনগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।এছাড়া মুসলিমদের জান্নাতের বিকল্প কোন পথ নেই।
সূরাঃ ৩৪ সাবা, ২০ নং আয়াতের অনুবাদ-
২০। তাদের সম্বন্ধে ইবলিশ তার ধারনা সত্য প্রমাণ করল। ফলে তাদের মধ্যে একটি মুমিন দল ব্যতীত সকলেই তার অনুসরন করল।
* উপরোক্ত কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী তাদের মধ্যে একটি মুমিন দল হানাফী ব্যতীত অন্য সকলেই ইবলিশের অনুসরন করছে।
সূরাঃ ৫৮ মুজাদালা, ১৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
২০। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা হবে চরম লাঞ্চিতদের অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছেন, আমি অবশ্যই বিজয়ী হব এবং আমার রাসূলগণও। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩৯। আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহতো এর দর্শক।
* যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চান এবং তাদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে চান।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে যাদের সম্পর্কে তোমরা জাননা, আল্লাহ জানেন।আল্লাহর পথে তোমরা যা ব্যয় করবে এর পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।
* আল্লাহ তাঁর ও মুমিনদের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুমিনদের প্রস্তুতি চান।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬৫ ও ৬৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৫। হে নবি! মু’মিন দিগকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ কর। তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজন উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে একশত জন থাকলে এক হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে।কারণ তারা বোধশক্তিহীন সম্প্রদায়।
৬৬। আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন।তিনিতো অবগত আছেন যে তোমাদের মধ্যে দূর্বলতা আছে।সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশত জন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজন উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহর অনুমতিক্রমে তারা দুই হাজারের উপর বিজয়ী হবে।আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
* আল্লাহ যুদ্ধের জন্য মুমিনদের জনবল বৃদ্ধি চান। আর ইবলিশ চায় মুমিনদের দল যেন কিছুতেই বড় হতে না পারে। সেজন্য সে মুমিনদের দল হানাফী থেকে ছোট ছোট ৭২ দল বের করে নিয়েছে।
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১৩৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৩৯। তোমরা হীন বল হবে না এবং দুঃখিত হবে না। তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।
* ইবলিশ হানাফীদের থেকে ৭২ দলকে সরিয়ে নিলেও মুমিন বলে তারা চির জয়ী। তেরশ বছরের বেশী সময় ধরে তারা মুসলিমদের ৭২ দলের উপর বিজয়ী অবস্থায় বিদ্যমান।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৩৭ নং হাদিসের (অবতরনিকা অধ্যায়) অনুবাদ-
২৩৭। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই কতক লোক আছে, যারা কল্যাণের চাবিকাঠি এবং অকল্যাণের দ্বার রুদ্ধকারী। পক্ষান্তরে নিশ্চয়ই কতক লোক আছে, যারা অকল্যাণের দ্বার উন্মোচনকারী এবং কল্যাণের দ্বার রুদ্ধকারী। আর সেই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যার হাতে আল্লাহ কল্যাণের চাবি রেখেছেন।আর ধ্বংস তার জন্য যার উভয় হাতে আল্লাহ অকণ্যাণের চাবি রেখেছেন।
* আব্বাসীয় হানাফী খলিফাগণ ও অটোমান হানাফী সুলতানগণ বারশত বছর মুসলিমদের জন্য কল্যাণের চাবিকাঠি এবং অকল্যাণের দার রুদ্ধকারী ছিল। তখন তারা ছিল বিশ্ব নিয়ন্ত্রক। তখন মুসলিমদের উপর অমুসলিমরা চড়াও হতে ভয় পেত। হানাফী বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ বিলুপ্ত হওয়ার পরেই অমুসলিমরা মুসলিমদের উপর চড়াও হতে শুরু করে। এমনকি পরাশক্তি রাশিয়া হানাফী ঘাটি আফগানদেরকে হামলাকরে বসে। অবশেষে তারা আফগান হানাফীদের সাথে বাজেভাবে হেরেগেছে। পরাশক্তি আমেরিকাও আফগানদেরকে হামলা করে অবশেষে তাদের সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হয়েছে। হানাফীরা আবার বিশ্ব নিয়ন্ত্রকের আসনে উপবিষ্ট হতে পারলে তা’ মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট কল্যাণকর হবে। হানাফীরা ছাড়া মুসলিমদের আর কোন দল কখনো মুসলিমদের জন্য হানাফীদের মত কল্যাণকর সাব্যস্ত হয়নি।সংগত কারণে তারা মুসলিমদের সঠিক দল সাব্যস্ত হতে পারে না।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৬ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৭৭৬। আনাস ইবনে মালেকের (রা.) খালা এবং মহানবির (সা.) দুধ খালা উম্মু হারাম বিনতে মিলহান (রা.) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! কে আপনাকে হাসালো? তিনি বললেন, আমার উম্মতের কতক লোককে আমার নিকট এমন অবস্থায় পেশ করা হয়েছে যে, তারা এই সমূদ্রের উপর সওয়ার হয়েছে, যেমনভাবে বাদশাহ সিংহাসনে আরোহন করে। উম্মু হারাম বললেন, তিনি তাঁরজন্য দোয়া করলেন। এরপর পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন। অতঃপর প্রথম বারের ন্যায় জাগ্রত হলেন। তারপর উম্মু হারাম (রা.) অনুরূপ বললেন, রাসূলও (সা.) প্রথমবারের অনুরূপ জবাব দিলেন। উম্মু হারাম (রা.) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভূক্ত থাকবে। আনাস (রা.) বলেন, অতঃপর তিনি তাঁর স্বামী উবাদা ইবনে সামিতের (রা.) সাথে বের হলেন জিহাদ করার জন্য, যখন মুসলিমগণ মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের সাথে সর্ব প্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা করে। অতঃপর তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করলেন তখন সওয়ার হওয়ার জন্য তাঁর কাছে একটা জন্তুযান আনা হলো। জন্তুযানটি তাকে ফেলে দিল। এতেই তিনি ইন্তিকাল করলেন।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৭৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অনুবাদ-
২৭৭৮। হযরত আবু উমামা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি যে, নৌ-পথের যুদ্ধের একজন শহীদ স্থলপথে দুইজন শহীদের সমান, আর নৌ যুদ্ধে যার মাথা ঘুরবে সে সেই ব্যক্তির মত স্থলপথে যে নিহত হয়। আর দুই ঢেউয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব অতিক্রমকারী আল্লাহর আনুগত্যে পৃথিবী সফরকারীর সমান। আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশতাকে সকলের জান কবয করার দায়িত্ব প্রদান করেছেন, নৌ যুদ্ধের শহীদের জান ব্যতীত। কেননা আল্লাহ নিজেই তাদের রুহ নিয়ে নেন। স্থলপথের শহীদের সকল গুনাহ তিনি ক্ষমা করে দেন ঋণ ব্যতীত, আর নৌ যুদ্ধের শহীদের সকল গুনাহ এবং ঋণও তিনি ক্ষমা করে দেন।
* নৌ-যুদ্ধে শত শত বছর সমূদ্রে রাজত্ব করেছে অটোমান হানাফীরা। সংগত কারণে তারা আল্লাহর বিশেষ বান্দা হিসেবে সাব্যস্ত।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৭। হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে হিন্দুস্থানের যুদ্ধের আশ্বাস দিয়েছেন। আমি তা’ পেলে তাতে আমার জান মাল উৎসর্গ করব। আর আমি যদি নিহত হই তবে মর্যাদাবান শহীদ বলে গণ্য হব, আর যদি প্রত্যাবর্তন করি, তাহলে আমি আবু হুরায়রা হব আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত।
সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিসের (জিহাদ অধ্যায়) অুনবাদ-
৩১৭৮। হযরত রাসূলুল্লাহর (সা.)গোলাম সাওবান (রা.)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আমার উম্মতের দু’টি দল, আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জাহান্নাম হতে নাজাত দান করেছেন, একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে আর একদল যারা ঈসা ইবনে মরিয়মের সাথে থাকবে।
* তরাইনের দ্বিতীয় ও পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ হয়েছে আফগান হানাফী ও ভারতীয় হিন্দুদের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আফগান হানাফীদের সহায়ক ছিল মোগল হানাফীরা।যা মোগল ও আফগান হানাফীদেরকে মহানবির (সা.) উম্মত সাব্যস্ত করে। ভারতে সামনে হিন্দুদের সাথে যুদ্ধ হলেও তাও হানাফীদের সাথেই হবে। সংগত কারণে সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৭ নং হাদিস ও সহিহ সুনানে নাসাঈ, ৩১৭৮ নং হাদিস দ্বারা অহানাফী কোন দলকে সঠিক সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন